আমার বাপে ভাষা সৈনিক, চাচা মুক্তি যোদ্ধারে ভাই
ফেব্রুয়ারি, মার্চ, ডিসেম্বরে কত শত কদর পাই।
গলা বরে ফুলের মালায়, কতো ফুল যে হায়রে হায়র
ফেব্রুয়ারি, মার্চ, ডিসেম্বরে আমার গর্বে বুকটা ফাইট্টা যায়।

আমার বাপে ভাষা সৈনিক, আমার গর্ব আর বড়াই
আমার পুলারে কিন্তু আমি ইংলিশ মিডিয়ামেই পড়াই।
অহন কউ দেহি ভাই, কউ দেহি  আমার কি আর দোষ থাকে হায়
পুলায় যদি ইংরেজিতে ইংল্যান্ডেরই স্কলারশীপ পায়।

আমার চাচা মুক্তি যোদ্ধা তাই সরকারী ভাতা পায়
ভাতার টেকায় কোন রকম বুড়া বুড়ি চইল্লা যায়।
পুলায় তাহার বউ নিয়া আলগা ঘরে, আলগা খায়
সরকারী একটা চাকুরি পাইছে মুক্তিযোদ্ধা কোটায়।

আমরাই তো দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল
বাহুতে বল বাড়াতে আমরা করি কতোইনা কৌশল।

সময় এলে যাদের মোরা করি গুরুদান
সময় গেলে তাদের আবার করি বদনাম।

হোকনা দিনটা আবার রাত
কতোই বা দূর নতুন প্রভাত?
হোকনা রাতটা আবার প্রভাত
কতোই বা দূর নতুন চাঁদ?

এই তো কিছুক্ষন আগে কুকিল ডেকেছে। মনে করিয়ে দিয়েছে বসন্ত দোয়ারে দাঁড়িয়ে। শুধু একটি নতুন সূর্যের অপেক্ষায় প্রতিটি বাঙ্গালির প্রাণ মন অন্তর।

শীতের এই বিদায় বেলা কিছুটা ব্যদনা মনে জমা হলেও তা কেটে যায় বসন্তের আগমনে। বাংলার ছয় ঋতুর রাজা ঋতুরাজ বসন্ত। এই বসন্ত নিয়ে কতো শত কবি রচনা করেছেন কতো শত কাব্যমালা। এই বসন্ত এলে এখনো কতো শত কবিতার জন্ম হয়।

আমি আধারী, আলেয়ায় বসবাস
আশার মৃত্যুতে, আশাহীন নিরাশ।
আধারের পাখির গান শুনা হয়
হয়না কভু দেখা, সে পাখি।
না আমি অন্ধ নই, ঠিক আছি, ঠিক আছে আমার আখি।

মাদানে মায় কইলো খোকা আমার ভুর করে আয় ভাত নিতাছি থালে
মুখে তুলে খাইয়ে দিমু লক্ষি খোকা বলে।
কপালের ঐ কোনে নজর টিপ দিমু কেউর নজর পরেনা বলে
তোর বাপে তোরে কইছে আজ হাটে নিবো বৈকালে।
বান্দরের মতো নাইচ্ছা নাইচ্ছা নাইতে গেলাম পুসকুনিতে
আয়া দেখি মায় আমার পইরা আছে মাটিতে।

তোর বুকের পাজরে যদি আগলে রাখতি আমায়
তবে আর আজ লোকে আমাকে পাগল বলতোনা।
আমাকে নিয়ে উপহাস করতোনা, করতোনা টিটকারী।

হে মাতৃভূমি মা পায়নি তোমার সন্তানরা
লাল রক্ত আর ত্বিক নোনা জলের দাম।
যারা দাম দেবে, তারা আজ অভিনেতা, মা সুনিপুণ অভিনেতা
ক্ষমতার বড়াই, আর ক্ষমতার লড়াই, আর দেশ প্রেমের অভিনয়ে ব্যস্ত ওরা।
দেখেনা মা তারা তোমার সন্তানদের খিদার জ্বালার আর্তনাদ
দেখেনা তারা বস্ত্রহীন পৌষের রাতের থরথর কাপন
দেখেনা তারা ফুটপাতে লুটোপুটো হয়ে ঘুমিয়ে থাকা তোমার শিশু সন্তানের কষ্টার্থ জীবন।
ওরা পাষাণ মা পাষাণ, অতিতের হিংস্রদের সমমান
সুযোগ পেলেই ছুরি চালাবে মা তোমার পেট, বুক কিংবা পিঠে
তবুও নিজেদেরকে দাবী করে মা তোমার শ্রেষ্ট সন্তান, ওরা অভিনেতা মা সুনিপুণ অভিনেতা

উত্তরে ঢোল তবলা আর বাঁশীর সুরে লালন ও হাসন
দক্ষিনেতে ভক্তগনের রাধাকৃষ্ণের গুণ কীর্তন
পশ্চিমেতে জিকির মাহফিল আর তবারকের আয়োজন
প্রেমিক মাতাল বুঝিতে পায়না কোন দিকে তার মন
পুবেতে ধোয়া ধোয়া কুয়াশা মাখা নিরব অচেতন
কোন দিকে যাবিরে তুই ও আমার প্রেমিক মাতাল মন?

মাটির এই পৃথিবীতে মাটির মানুষ নাইরে ভাই
মাটির মানুষের ভিতর পাথর খুজে পাই !!
অন্ন ভুখার কান্দনে আর গলে নারে মাটির মন
মনটা এখন মাটির নাইরে, হয়ে গেছে পাথর কখন !!

আমি না হয় অশ্রু ছিলাম তোর দুচোখের পাতা জুরে
তুই তো আমার স্বপ্ন ছিলি তবু, কেন গেলি সরে?
আজও তোরে খুজে বেড়াই শহর গ্রাম বন বাদারে
তুই কি আমায় দেখতে পাস, তোর চোখের পাতা বন্ধ করে?

মাদানে মায় কইলো খোকা আমার ভুর করে আয় ভাত নিতাছি থালে
মুখে তুলে খাইয়ে দিমু লক্ষি খোকা বলে।
কপালের ঐ কোনে নজর টিপ দিমু কেউর নজর পরেনা বলে
তোর বাপে তোরে কইছে আজ হাটে নিবো বৈকালে।
বান্দরের মতো নাইচ্ছা নাইচ্ছা নাইতে গেলাম পুসকুনিতে
আয়া দেখি মায় আমার পইরা আছে মাটিতে।

তোর হারানো পথের পথিক হবো, বল সঙ্গে নিবি?
তোর ভাঙ্গা স্বপনের বপন করবো, বল স্বপ্ন দিবি?
তোর পুড়া অন্তরে প্রেমের সৃজন করবো, বল করতে দিবি?

আরে জানী তো আমি পাগল উদ্ভুক সবাই বলে
তুই আর নতুন করে বলবি কি?
ভালবাসা দিবি, বল ভালবাসা দিবি আমায়?
না দিস, ভালবাসা নিবি আমার, বল নিবি?

মাদানে মায় কইলো খোকা আমার ভুর করে আয় ভাত নিতাছি থালে
মুখে তুলে খাইয়ে দিমু লক্ষি খোকা বলে।
কপালের ঐ কোনে নজর টিপ দিমু কেউর নজর পরেনা বলে
তোর বাপে তোরে কইছে আজ হাটে নিবো বৈকালে।
বান্দরের মতো নাইচ্ছা নাইচ্ছা নাইতে গেলাম পুসকুনিতে
আয়া দেখি মায় আমার পইরা আছে মাটিতে।

দিন দিন আমার পৃথিবীটা ছোট হয়ে আসছে।
হচ্ছে কোলাহল মুক্ত, আর কমে আসছে লোকালয়।
কমে যাচ্ছে বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজন পরিচিত জন।

আর কিছুদিন পরেই নিঃসঙ্গতা আমাকে আকড়ে ধরবে
কুড়ে কুড়ে ছোট করে দেবে আমায় আয়ু রেখা।
আমি হবো মৃত্যু পথযাত্রী সেজন।

তারপর আর হবেনা নতুন কথামালার সৃজন
হবেনা আর কোন স্বপ্নের বিসর্জন কিংবা বাহ বাহ অর্জন।
বৃষ্টির স্পর্শ থেকে নিজেকে আড়াল করতে পালাতে হবেনা অট্টালিকার পরে
বৃষ্টি আমায় স্পর্শ করবে কাদা মাখা করবে ছোট্ট সারে তিন হাত মাঠির ঘরে।

বেকুব আমি বেকুব আমার মন
বেকুরির মাঝেই আমার জীবন
কিসের চিন্তা ভাবনা যত্বসব খেতা পুড়ি
আমি তো করিনি কভু কারো মাথা চুরি
ঐ শালা চুর দেখেননা তার কত্ব বড় বুড়ি
আমারে চুর বানায়া দিয়াছে চৌদ্দ শিখে বড়ি।

আমি দেখেছি সমাজের সু-সন্তান শিক্ষকদের বেতনের দাবীর শান্তসৃষ্ট আন্দোলনে টিয়ার সেল রাবার বুলেট জল কামানে পুলিশী হামলা হয়।
আমি আজো দেখিনি শত বছরের ঐতিহ্য এমসি কলেজ হোস্টেল আর রাজশাহী কলেজে হোস্টেল আগুনে পুড়ানো ছাত্রলীগের বিচার হয়।
আমি দেখেছি একজন এমপি আইন হাতে তুলে নিয়ে একজন শিক্ষককে কান ধরিয়ে রাখার স্পর্ধা হয়।
আমি আজো দেখিনি সেই এমপি নিজের ভুলের অনুশোচনা আর নিজের উপর ঘৃণা লজ্জায় কান ধরে দাঁড়িয়ে রয়।
আমি দেখেছি একজন শিক্ষকের কান ধরার লাঞ্চনার অনুভূতি আর প্রতিবাদে গোটা বাংলাদেশ কি ভাবে কান ধরে দাঁড়িয়ে রয়।
আমি আজো দেখিনি এত্ত এত্ত প্রতিবাদের কোন সুফল, ফল হয়।

বুঝেছি আমি আটার কিংবা ৩৬ বৎসরের শিক্ষতা স্যারদের ব্যর্থ আজ।
সার্টিফিকেটদারী শিক্ষিত গড়েছেন ঠিকি, করতে পারেনি মানুষ গড়ার কাজ।
মানুষ যদি গড়তেন তবে হতোনা স্যারদের উপর হামলা লাঞ্চনা আর অপবাদ
আজ বুঝেছি আমি ঠিকি "মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষক" শুধুই প্রবাদ।

সাজানো গোছানো সুন্দর সমাজ অতিতে পুকা-মাকর করেছিল গ্রাস
আজ পুকা-মাকররা দিনে দিনে বড় হয়েছে, বেড়েছে তাদের ক্ষমতা।
নিয়েছে রুপ হায়নায়, সমাজকে আজো করছে গ্রাস সমাজ বদলের বায়না

সমাজ বদলে গেছে অনেক, নিছক দুর্বল অসহায় মানুষের দ্বায়ে
হায়নার দল ক্ষমতার জোরে নিচ্ছে সমাজ বদল তাদের দখলে।
হায়নার ভয়ে, যায়ানা পাড়ার বেওয়ারিশ কুকুরটাও হায়নার দুয়ারে।

পদ্মপাতার জল দীঘি, শান্ত নদীর ঢেউ
এই খানেতেই ছিল আগে, হারিয়ে গেল কই?
ঐ পাশেতে ধানের খ্যাত চাষ করতো চাষা
একটু দূরেই তাল গাছেতে বাধতো বাবুই বাসা।
ক্লান্ত পথিক শান্ত হতে বট তলাতেই নিতো একটু জিরায়ে
আমার সেই সোনার গ্রাম কেউকি দেবে আবার ফিরায়ে?