বুধবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৭

আমারেও নিয়া যারে তুই দে তোর বুকে আমাদের নতুন আবাস

মাদানে মায় কইলো খোকা আমার ভুর করে আয় ভাত নিতাছি থালে
মুখে তুলে খাইয়ে দিমু লক্ষি খোকা বলে।
কপালের ঐ কোনে নজর টিপ দিমু কেউর নজর পরেনা বলে
তোর বাপে তোরে কইছে আজ হাটে নিবো বৈকালে।
বান্দরের মতো নাইচ্ছা নাইচ্ছা নাইতে গেলাম পুসকুনিতে
আয়া দেখি মায় আমার পইরা আছে মাটিতে।



মায় আমায় কইতো মাটির মানুষ যাইবো আবার মাটিতে
আমারে ভাত না দিয়া মায় শুইয়া আছে পাটি ছাড়া মাটিতে।
কান্দি আমি কান্দে পাড়া পরশি, কান্দে আমার বাজানে
কাইন্দা কাইন্দা বাপ পুতে বৈকালে গেলাম বাজারে।

হাটে কত্ত হই চই খালি কান্দি আমি কান্দে আমার বাজানে
কাইন্দা কাইন্দা কাফন আনছি আমার মায়ের জন্যে।
মায় আমায় আদর কইরা মুখে তুইল্লা ভাত খাওয়ানি মাদানে
হাটে ঠিকি নিছে আমায় বৈকালে কান্দে তুইলা বাজানে।

মায় আমার মিথ্যুক বড়ই গেছে চলে আমায় একলা রাইক্ষা
রাতের বেলা হিয়াল ডাকলে পাইনা খুইজা মায়েরে ডাইক্কা।
মায় আমার শুউয়া আছে মাটির নিচে ছোট্ট ঘরে
মায়ের লাগি অন্তরে আমার ভিষন ভিষন ডর করে।

বাপজানে কয় তুই পিচ্ছি পুলা কামে কাজে কেমনে যাই রাইক্ষা তোরে একলা ঘরে
সেই দিন তাই আমি তাই মামুর বাড়ি  গেলাম কাদার পথে গরুর গাড়ি চড়ে।
মামুর আমার এক মাইয়া নাই কোন পোলা
বিষন খুসি হলো মামু আমারে কাছে পাইয়া।

আইজ আমি অনেক বড়, করছি পাঁচ সবেই পাঁচ ক্লাস পাশ
মায়েরে বাজানরে কইয়া আসি খুসির খবর খান।

ওমা একী কৈ আমাদের বাড়ি, কই সেই বকুল গাছ
যেইখানেতে ছোট কালে মাটির ঘরে শুয়াই ছিলাম মায়ের লাশ?
পদ্মা নদী ঐ দূরে আছিল আজ আমাদের বসত ঘরে
বাপ নাকী ভাইসা গেছে ঘুমের মাঝে নদীর জলে।
সর্বনাশা পদ্মা নদী বাজানরে নিলো, বসত নিলো, নিলো মায়ের লাশ
দিয়ে গেল এতিম করে, ভিটা ছাড়া করে, করে আমায় একটা জীবন্ত লাশ।
সর্বনাশা পদ্মারে তুই করলি একী সর্বনাশ
বাজানরে নিলি, বসত নিলো, নিলি মায়ের লাশ
আমারেও নিয়া যারে তুই দে তোর বুকে আমাদের নতুন আবাস।

কোন মন্তব্য নেই: