মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৭

দুর্নীতি নির্মূল অভিমত আহবান


ঘুষবিহীন যে সরকারি কোন চাকরি হয়না, এদেশের কোন গর্দভের ও তা অজানা নয়। যদিও এদেশে এখন গর্দভ আছে কিনা তা আমার জানা নেই। হয়তো বহু আগেই তা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কিন্তু না ঘুষ এখনো বিলুপ্ত হয়নি। বরং কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। ঘুষ দিয়ে সরকারি চাকরি নেওয়া কর্মকর্তা কর্মচারী কখনোই ঘুষ নেবেননা এমনটা কল্পনা করাটাও গর্দভের কাজ। ঘুষ দিয়ে চাকরি নেওয়াই সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে ঘুষ নেওয়ার প্রবণতা সৃষ্টি করে। চাকরি দেওয়া নেওয়ার বেলা বড় বড় প্রাইভেট ফার্মগুলি যে ঘুষ মুক্ত তাও কিন্তু ভাবা গর্দভের কাজ।



রাষ্ট থেকে ঘুষ (দুর্নীতি) নির্মূল করতে হলে সর্ব প্রথম ঘুষবিহীন চাকরি নিশ্চিত করতে হবে। ঘুষ দিয়ে চাকরি নেওয়া মানে মোটা অংকের একটা পুঁজি (মূলধন) খাটানো। নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নিয়োগের পরপরি ব্যস্ত হয়ে পরেন উনাদের পুঁজি (মূলধন) উত্তোলনে। আর এই পুঁজি উত্তোলন করতে গিয়ে নতুন নিয়োগপ্রাপ্তরাও জড়িয়ে যান ঘুষ (দুর্নীতি)আদানে। এক সময় হয়তো পুঁজি (মূলধন) তুলে ফেলেন। কিন্তু না ঘুষ (দুর্নীতি) নেওয়া থেমে যায় না উনাদের। বরং দীর্ঘ দিনের ঘুষ (দুর্নীতি) নেওয়ার অভিজ্ঞতা উনাদেরকে আরো উজ্জীবিত করে তুলে। সেই দীর্ঘ অভিজ্ঞতাই উনাদেরকে করে তুলে প্রভাবশালী ঘুষখোর বা দুর্নীতিবাজ হিসেবে। তার মানে এই দীর্ঘ দুর্নীতির মূল বা গোড়া কি দাড়ালো? জি ঘুষ দিয়ে চাকরি নেওয়াই এই দীর্ঘ দুর্নীতির মূল বা গোড়া। তার মানে রাষ্ট থেকে দুর্নীতির মূল বা গোড়া ধংস করতে হলে সবার আগে ঘুষবিহীন চাকরি নিশ্চিত করতে হবে।

এখন নতুন প্রশ্ন দাঁড়ায়- তারা কারা, যারা ঘুষ নিয়ে সরকারি চাকরি দিচ্ছেন?
সে প্রশ্নের উত্তর না হয় আমরা অতি শীঘ্রই অন্য কোন লেখায় তুলে ধরবো। যদিও এর উত্তর কারোরই অজানা নয়।

বহু বছর থেকেই সরকারি প্রতিষ্টানের দেয়াল সহ পাবলিক প্লেইসে দেখা যায় দুদক কর্তৃক দুর্নীতি বিরোধী পোস্টার লাগিয়ে দুর্নীতি নির্মূল করার বৃথা চেষ্টা করা হচ্ছে। দেয়ালে পোস্টার লাগিয়ে দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব নয়, তা নিশ্চয় দুদক কর্তৃপক্ষের অজানা নয়। তবুও কেন দুদক এই নামদারি লোক দেখানো দুর্নীতি প্রতিরোধ পোস্টার প্রচার করে যাচ্ছেন?

হয়তো দুদকের উত্তর হতে পারে যে, জন সচেতনতা সৃষ্টিই এই দুর্নীতি বিরোধী পোস্টার লাগানোর মূল লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য। যদি দুদকের উত্তর এমন হয় তবে আমার প্রশ্ন – জন সচেনতা সৃষ্টি করা যদি আপনাদের মূল লক্ষ্য হয়ে থাকে তবে দুর্নীতিবাজদের সচেতন করা কাদের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য?

এদেশের সাধারন মানুষ ঘুষ বা দুর্নীতি সমন্ধে অনেক সচেতন। কিন্তু এই সচেতনতা কাজে লাগাতে পারছেন না। কারণ সাধারন মানুষকে দুর্নীতিবাজরা জিম্মি করে নিচ্ছেন। আর জিম্মি হওয়াই বাধ্য করে সাধারন মানুষকে ঘুষ প্রদানে।

সরকারি প্রতিষ্টানগুলির দুর্নীতির লাঘব টেনে ধরতে হলে প্রতিটি ছোট ছোট সরকারি প্রতিষ্টানগুলিতে কমপক্ষে একজন কর্মকর্তা ও কয়েকজন কর্মচারী নিয়ে দুদক অভিযোগ কেন্দ্র গঠন করতে হবে। বড় বড় সরকারি প্রতিষ্টানগুলিতে তারও অধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়ে দুদক অভিযোগ কেন্দ্র গঠন করতে হবে। অভিযোগ কেন্দ্র গঠন করলেই যে দুর্নীতি নির্মূল হবে তাও কিন্তু নয়। অভিযোগ কেন্দ্রের যথাযথ সদ্ব্যবহারে যতেষ্ট পরিমানে দুর্নীতির লাঘব টেনে ধরা সম্ভব বলে আমার ব্যক্তিগত অভিমত। দুর্নীতির লাঘব টেনে ধরতে এর চেয়েও সুন্দর ও উন্নত অভিমত তুলে ধরতে পারবেন এদেশের জাতীয় অভিভাবক, বুদ্ধিজীবী, সুশীল ব্যক্তি বর্গ, লেখক, কলামিস্ট, ব্লগার গন সহ এদেশের অসংখ্য সচেতন নাগরিক। আর এই অভিমত উঠে আসতে পারে একমাত্র দুদুক কর্তৃপক্ষের “দুর্নীতি নির্মূল অভিমত আহবান”এর মাধ্যমে। আমি আশাবাদী অতি শীঘ্রই দুদক এমনি এক আহবান জানাবেন দেশের সচেতন নাগরিদেরদের।

কোন মন্তব্য নেই: