কাল পুরোটা দিন অনেক খুজেছি তোকে তোর শহরে (আমার স্মৃতির শহর)।
স্মৃত্বি ঘেরা দুলি কণা ছাড়া কিছুই পেলামনা।
সুরঞ্জনা তোমার মনে আছে আমি এক সময় লম্বা চুল হাতে ব্রেস লাইট,
কানে রিং, গলায় চেইন ও চোখে রঙ্গিন চশমা পড়তাম।
আমার সেই উগ্র চলাফেরা তুমি মোটেও পছন্দ করতে না বলে
আমায় দিনে দিনে পরিবর্তন করে চলছিলে।
মানে তোমার মতো আমাকে তৈরি করছিলে।
ব্রেস লাইট, গলার চেইন, রঙ্গিন চশমা থেকে ঠিকি আমায় পরিবর্তন করেছিলে।
শুধু পারনি কানের রিং থেকে আমায় মুক্ত করতে।
তোমার মনে আছে সেদিন, আমরা আহসান মঞ্জিলের সিড়ির একটু বাম পাশে বসে ছিলাম
ঠিক রক্ত জবা গাছটার নিচে।
তুমি আমার কানে রিং দেখে তা নিয়ে খুব ঝগরা করছিলে আমার সাথে।
এক সময় তুমি খুব রেগে গিয়ে হাত দিয়ে ঠান দিয়ে আমার কান থেকে
রিংটি খুলতে গিয়ে ঘাসের মধ্যে পরে গিয়েছিল।
আমি অনেক খুজে খুজে যখন আর এই দুলটি না পেয়ে কাদো কাদো
হয়ে গিয়েছিলাম তুমি তখন নিজেকে অপরাধী অপরাধী ভাব নিয়ে আমার সাথে
সেই সবুজ ঘাসের ভিতরে রিংটি খুজছিলে।
সুরঞ্জনা তোমার মনে আছে কি আমরা দুই জন যখন রিংটি খুজে পেতে ব্যর্থ হলাম তখন তুমি
আমার কাদো কাদো চেহারা দেখে সত্যি সত্যি তুমি কেদে দিয়ে বলেছিলে
আসেন আপনাকে নতুন একটা কানের রিং কিনে দেই।
আমি তোমার কান্না দেখে চক্ষু লজ্জা ভুলে গিয়ে
তোমায় বুকে জরিয়ে বলেছিলাম আমি আর কোন দিন কানে রিং পরবোনা।
তুমি সাথে সাথে কান্না ভুলে মুচকি হাসি দিয়ে বলেছিলে ছাড়ুন,
দেখেননা সবাই ফেল ফেল করে তাকিয়ে আছে।
আমি ডানে বামে ও পিছনে তাকিয়ে দেখি সব মানুষ গুলি আমার কান্ড দেখে হাসছে।
আমিও তোমার মতোই লজ্জা পেয়ে গেলাম।
সেই থেকেই আর কভু কানের রিং পরা হয়নি আমার।
এখনো আমি তোমার শহরে, তোমার স্মৃত্বি কুড়াতে গেলে আহসান মঞ্জিলে
গিয়ে সেই কানের রিংটা কুড়াতে ভুল করিনা।
কোন বারই পাইনি।
জানী পাবনা তবুও মিছেমিছি খুজে বেড়াই।
জানো আহসান মঞ্জিলে উপস্থিত দর্শকরা আমার কান্ড দেখে মুচকি হাসে।
সম্ভবত উনারা আমায় ভাবেন পাগল।
ঠিক যেমন তুমিও একদিন ভাবতে।
জানো এবারো, না মানে গত কালও আমি আহসান মঞ্জিল গিয়ে ছিলাম।
আশ্চর্য কি জানো?
রক্ত জবা গাছটার নিচে, ঠিক আমাদের মত সেই বয়সি দুইটা ছেলে মেয়ে বসে আছে।
জানো ওদেরকে ওখানে বসা দেখে আমার অনেক হিংসা লাগছি।
যদিও তুমিও আমার মায়ের মতো বলতে আমি মোটেও হিংসুটে না।
কিন্তু আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম আমি হিংসেতে জ্বলে যাচ্ছিলাম।
আরো আশ্চর্য কি জানো ওই ছেলে মেয়ের জন্যই কাল আর কানের রিংটা খুজা হলোনা।
মনে মনে অনেক বকা দিয়ে ত্যাগ করতে হলো আহসান মঞ্জিল।
জানী আমার লেখা কথা গুলি দেখলে তুমি ও ওদের মতো হাসবে
না মানে এখন যারা এই লেখাটা পড়ছেন তাদের কথা বলছি।
জানো ওরা ওনা আমায় তোমার মতো করেই পাগল বলে।
কিন্তু তোমার মতো...............থাক বলবো না।
তোমার শহরটা তোমার মতোই বদলে যাচ্ছে দিন দিন।
তোমার মতোই হচ্ছে আরো পাশান।
তুমি যেই জায়গায় দাড়িয়ে ঈদের সালাম করতে আমায়
কাল দেখলাম সেই যায়গাতে ফ্লাই অভারের মস্ত বড় একটা খাম্বা দিয়ে
আমার স্মৃত্বি গুলির কবর দেওয়া হয়েছে।
দিন দিন এভাবেই স্মৃত্বির শহরটা স্মৃত্বি শূণ্য হয়ে পরবে
ঠিক সেই ভাবেই শূণ্য হয়ে পরবে তোর প্রেমিক মাতালের আয়ু রেখা।
তখন তুই কি করবিরে পাগলি (সুরঞ্জনা)?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন